অরুন সুইটসের ইতিহাস অশোক কুমার নাগ প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার

অরুন সুইটসের ইতিহাস অশোক কুমার নাগ প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার
অরুন সুইটসের ইতিহাস অশোক কুমার নাগ প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার

বাঙালি চিরদিনই মিষ্টান্ন  প্রিয়। আর এই রসনার স্বাদ মিটিয়েছে এই বাংলার  মিষ্টান্ন শিল্পী ময়রা বা মোদকরা। যে মিষ্টান্ন শিল্প যা আজ কুটির শিল্পের মর্যাদা পেয়েছে। এই শিল্পের এই মর্যাদা বা সম্মান পাওয়া সত্বেও ময়রারা তাদের পূর্ব পুরুষের বৃত্তি থেকে অনেকেই অনেক দূরে চলে গেছেন। দেব দেবীর পুজোয় যাদের হস্তশিল্প আজও নিবেদিত সে শিল্প আজও বহুলাংশে অময়ারাদের হাতে চলে গেছে। এটা অপরাধ নয়, তবু বলি এ শিল্পেও পরিবার পোষণ করা যায়। অর্থনীতির দিক হতে কোন অংশে কম নয়। এ শিল্প আজ বিদেশের মাটিতে পা দিয়েছে। এ কথা প্রায় প্রত্যেকেই জানেন। বাংলার রসগোল্লা এবংওড়িশার রসগোল্লা নিয়ে যে দ্বন্দ্ব ছিল সেই দ্বন্দ্বে আমি অর্থাৎ দুর্গাপুরে সিটি সেন্টারের “অরুন সুইটস” বাংলার রসগোল্লার খ্যাতির সরকারি স্বীকৃতি পেয়েছে। প্রত্যেক কর্মের প্রতিষ্ঠার পিছনে চাই তাঁর সততা অধ্যাবসায় কর্মনিষ্ঠা। সর্বোপরি চাই মানবতা ও ধর্ম। তাঁর কৃপা ভিন্ন কারো কোনো কিছু হয় না।

আমি বর্তমানে পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুর সিটি সেন্টারে “অরুন সুইটস” এর পরিচালক দুই পুত্র আমার ব্যবসায়ে সহযোগী। আমার পৈতৃক নিবাস পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোট থানার অজয় নদীর ধারে নতুনহাট গ্রামে। বর্ধিষ্ণু ব্যবসার উপযুক্ত গ্রাম পার্শ্ববর্তী বহুগ্রামের সঙ্গে এর যোগাযোগ। বর্ধমান, কাটোয়া, গুসকরা এমনকি রাজধানী কলকাতা সঙ্গে এর ভালো যোগাযোগ ছিল বা আছে।

১৯৬৩, ১৯৬৬ সালে অজয়ের ভয়াবহ বন্যায় এবং কয়েক বছর পদ্মার ভাঙ্গনের ন্যায় অজয় নদীর ভাঙ্গনে নতুনহাট গ্রামের অর্ধেক নদী গর্ভে চলে যায়। এবং তার ব্যবসায়িক বৈশিষ্ট্য ও প্রতিপত্তি হারিয়ে ফেলে। বাংলার উন্নয়নের সঙ্গে এখানকার যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নতর হওয়ায় সকল শ্রেণীর ব্যবসায়ীর ব্যবসায় ভাটা পড়তে থাকে। আমি ১৯৬৩ সালে কলেজের পাঠ্য জীবন শেষ করে কয়েক বৎসর চাকরির অনেক চেষ্টার পরে আমার পিতা ঠাকুরের অনুপ্রেরণায় স্ব – নির্ভর হওয়ার জন্য আমাদের নতুনহাটেই একটা নিত্য প্রয়োজনীয় নানা রকমারি দ্রব্যের ব্যবসা শুরু করি এবং কয়েক বছরের মধ্যে সুনাম ও প্রতিষ্ঠা লাভ করি। সেই সময় দুর্গাপুরের নিকটে গোপালপুরে আমার বিবাহ হয়। কিন্তু কয়েক বছরের মধ্যে প্রতি সংসারের মতো আমার সংসারেও হৃদ্যতার অভাব হওয়ায় আমি নতুনহাটের ওই দোকান পরিচালনার ভার আমার বড় ভাইপোর হাতে দিয়ে ডিএসপি তে মিহির দাস নামে একজনের সঙ্গে যৌথভাবে ঠিকাদারি ব্যবস্থা শুরু করি। সেখানেও উন্নতি ও পুনাম অর্জন করায় সমব্যবসায়ীদের সহানুভূতি পাওয়া সত্ত্বেও তৎকালীন ইউনিয়ন নেতাদের শোষণ ও অত্যাচারে ডিএসপি হতে আর কোনো কাজ না নিয়ে পি ডব্লিউ ডিতে ও তৎকালীন জেলা পরিষদে কাজ পাওয়া সত্ত্বেও স্থানীয়দের  কমিশন দিতে না পারায় কাজ বন্ধ করিয়া দিতে বাধ্য হইয়া পুনরায় নতুনহাটের দোকান পরিচালনা করিতে থাকি। আমার শ্বশুরবাড়ির আর্থিক সহযোগিতায় ১৯৭২ সালে সিটি সেন্টারে প্রপোজ মার্কেটে একটি মিষ্টির দোকান বুক করি। তখন নানাভাবে মানসিক বিধ্বস্ততার জন্য আমি পিতৃপুরুষের বৃত্তিকেই অধিকতর উপযুক্ত মনে করে এই ব্যবসা গ্রহণে সংকল্প করে প্রায় আজ ৫০ টি পরিবারের ভরণপোষণের ভার নিতে পেরেছি। ওই দোকান ঘর বুক করার সময় প্রেসপেক্টর অনুসারে কথা ছিল এক বছর পরে ব্যবসার উপযুক্ত ৩০০ স্কয়ার ফুটের ঘর ব্যবসায়ী উপযুক্ত পরিবেশে দেবে কিন্তু আধা সরকারি প্রকল্পে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে ৭৬ সালে আমাদের ব্যবসায়ের অনুপযুক্ত পরিবেশে বাসস্থানহীন দৈনন্দিন জীবন ধারণের অব্যবস্থার পরিবেশে “মাকুরি সপ্তমীর” দিনে দোকানে কোন রকমের পূজা দিয়ে ব্যবসা শুরু করি। বাবা তখন পরলোক গমন করেছেন। সেদিন শীতের ভোরে একজন এসে বললেন এক কাপ চা হবে? দোকান তখনো উদ্বোধন হয় নাই। আমি ভোরে উঠে তখনকার মিষ্টির দোকানের কয়লার উনানে আঁচ দেওয়ার উদ্যোগ নিচ্ছি। আগুন ও চায়ের চায়ের উপকরণের কোন ব্যবস্থা নাই। প্রথম খরিদ্দার আমি ছাড়বো না বললাম হ্যাঁ একটু দাঁড়ান। আমি করে দিচ্ছি। ঘুঁটে কেরোসিন ঢেলে কাঠ কে ভেঙে কুচো করে ছোট একটা কেটলিতে জল দিয়ে চা করার জন্য আফরান চেষ্টা করতে লাগলাম। নতুন তৈরি উনানে জল গরম আর হয় না, ভদ্রলোক অধৈর্য হয়ে করিডোরে পাইচারি করতে লাগলেন আমি শুধু বলে যাচ্ছি আর একটু, আরেকটু অবশেষে উনার হাতে এক কাপ চা দিলাম। চা খেয়ে বললেন কত? আমি সম্ভবত বলেছিলাম দুআনা ভদ্রলোক খুচরো পয়সা দিয়ে চলে গেলেন। আমি পয়সাটা কপালে ঠেকিয়ে ক্যাশ বাক্সে রাখলাম। ওই ভদ্রলোককে আর কোনদিন দেখা যায়নি। ৫-৬ বছরের পুরাতন দুটি প্রতিষ্ঠিত দোকান তখন রমরমে চলছে। পাশে সিএস ও ৮ বাঁকুড়ার অজিত নাগ ওরা স্বামী স্ত্রী ও একটি কর্মচারী নিয়ে দোকান চালু করেছেন। খরিদ্দার মাথা গোনা আমি মাঝে পড়ে আছি ৫০০ আলুর সিঙ্গারা সারা দিনে বিক্রি হয় না। রাত্রে সেই আলুর মসলা ধুয়ে তরকারি করে খেতে হয়। দুটি বাচ্চা আর আমার ছোট ভগ্নিপতিকে নিয়ে দোকান খুলেছি ভগ্নিপতি কারিগর আমি মিষ্টির দোকানের কোন কাজ জানিনা তবে চায়ের একটু খদ্দের হচ্ছে। স্বপাক রন্ধন। এক বছরের মধ্যে পুঁজিতে টান পড়ল। দু বছরের মাথায় এ ডি ডি – এর কিস্তি ফেল। নানা দুরবস্থার মধ্যে কাটতে শুরু করল। চিন্তায় পরলাম এই দু বছরে লক্ষ্য করলাম দুর্গাপুরের ছানার গুণমান বেশ খারাপ। তখন দোকানে প্রায় ১০-১২ কেজি ছানার কাজ হচ্ছে। আমি স্থির করলাম নতুনহাট হতে ছানা আনবো। ১৬ থেকে ১৮ কেজি, না আনলে পোষাবে না তাই কয়েক দিন আনার পর মুচিপাড়ার এক দোকানে যোগাযোগ করে মুচিপাড়ায় নেমে ওই দোকানদারকে ৫,৬ কেজি করে দিতে শুরু করলাম। তখন সিটি সেন্টারে কোন বাস বিশেষ করে কোন এক্সপ্রেস দাঁড়াতো না। গান্ধী মোড় হতে জিটি রোড ধরে ওই দুই বালতি ছেনা হাতে করে দু- তিনবার দাড়িয়ে আনতে হতো। আমি তখন ময়রার কাজ অনেকটা শিখে ফেলেছি, এসে কাজ করে পুনরায় ৩.৪০ কাটোয়াগামী বাসে উঠতাম, বাস আমার জন্য পেয়ালা মোরে দাঁড়াতো। নতুনহাট পৌছাতাম প্রায় ৭ টার পরের দিন পুনরায়।

সকাল ৬:৪০ মিনিটে কাটোয়ার বাস ধরে মুরাতিপুরে নেমে দুর্গাপুর গ্রামে বাস ধরে আসতাম। বেশিরভাগ দিনই ছানার বালতি দুটো নিয়ে আমাকে বাসের ছাদে আসতে হতো। একবার সরস্বতী পুজোর আগে বাসের ছাদে আসছি বুদবুদ হতে বৃষ্টি শুরু হলো সব পোশাক ভিজে গেল। অনুরোধে সিটি সেন্টারে নামিয়ে দিল। পোশাক পাল্টে কাজ সেরে পুনরায় নতুনহাট। দুদিন পরেই প্রবল জল বুকে ব্যথা একেবারে নিউমোনিয়া প্রায় ১৫-২০ দিন নতুনহাটে শয্যাশায়ী। সেই সময় ছোট ভাইপো শিবু ছেনা নিয়ে যাওয়া ও দোকান দেখার ব্যাপারে অনেক সাহায্য করেছিল। সে সময় আমার দোকানের বিক্রি বা আর্থিক অবস্থা এতটাই খারাপ হয়েছিল যে দোকান বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল। কিন্তু স্ত্রীর ভবিষ্যৎ চিন্তা ও অনুরোধে সে সিদ্ধান্ত বাতিল করেছিলাম। বাজারে ধার ও এ ডি ডি- এর কিস্তি পরিশোধের জন্য আমাকে সোনা বিক্রি করতে হয়েছিল। অনেক সময় এ ডি ডি – এর নির্দয়ভাবে আইন প্রয়োগে কোন নেতাদের সহানুভূতি পাই না।৭৮ সালের ভয়াবহ বন্যায় নতুনহাটের দোকানের খুবই ক্ষতি হওয়ার মঙ্গলকোট বিডিও মহাশয়ের বাস্তব অবস্থায় সার্টিফিকেট থাকা সত্ত্বেও কোন নেতা পাশে দাঁড়ান নাই। জীবনে নানা ঘাত প্রতিঘাতের মধ্যে প্রচুর পরিশ্রম আর ধৈর্য্য শারীরিক অনিয়মে নানা রোগ ধরিয়ে আজ দুর্গাপুরের বুকে প্রতিষ্ঠিত হয়েছি। বাড়ি গাড়ি সব হয়েছে আমার পিতা ঠাকুর মহাশয়ের আশীর্বাদ শাশুড়ি মাতার পরম মাতৃস্নেহে, গুরুদেব জোয়ালাপ্রসাদ তেওয়ারী ও যোগীরাজ শ্যামাচরণ লাহিড়ী মহাশয়ের পরম করুণার এবং সর্বোপরী আমার কুলদেবতা শ্রী শ্রী  লক্ষ্মী নারায়ণ ও সিদ্ধিদতার পরম কৃপায় আমার সংগ্রাম সার্থক হয়েছে। এঁদের শতকোটি করে প্রণাম জানিও আমার পূজা অপূর্ণ অসমাপ্ত রয়ে গেল। এবার চরণে ঠাঁই পাওয়ার আশায় অপেক্ষায় আছি।

Short introduction of
Dr.Biswajit Ruj


Dr.Biswajit Ruj did M Sc in Chemistry form Kalyani University,M.Tech form NIT, Durgapur,Ph.D form Jadavpur University and Advance Research carried out in Mc Master University, Hamilton, Canada.
Dr Ruj Joined in CSIR-Central Mechanical Engineering Research Institute, Ministry of Science & Technology, Govt.of India, Durgapur as a Scientist B in the year 1993 and subsequently he promoted to Scientist. Dr Ruj acted as a chair person of various committee of his Institute. He retired from his service in January,2024.
Dr. Biswajit Ruj has 30 years of research experience and significantly contributed in the field of Environmental Sciences. He has developed process for removal of excess iron, arsenic & fluoride form groundwater,plastic waste disposal & energy recovery through pyrolysis & plasma pyrolysis route.
Dr.Ruj received many prestigious awards. To site a few Raman Research Fellowship Award of CSIR, Ministry of Science & Technology,Govt.of India,CSIR Technology Award -received form the Hon’ble Ex- president of India Sri Ram Nath Kovind in 2017, Scientist of the Year Award, Environment Excellence Award, STE Fellowship Awardand so on. He has published/presented more than 100 research papers in reputed National and international journals/ Conferences,18 nos.  patent in his credit. Dr Ruj transferred 4 technologies to 29nos. Of private company for commercialization. He is also an Expert Committee Member of Ministry of New & Renewable Energy, Govt. Of India in Biofuel Sector and supervised 10 nos. M. Tech & Ph. D students. He has also handled international projects with ltaly and Czech Republic and delivered Iectures in poland, Czech Republic, Canada, Germany,Italy and USA.

Societal contribution:
Felicitation to the meritorious students of Kukhutia every year to motivate in Education (Since 1997)
Establishment of a Library in memory of his father to motivate the rural students in Education (Covering 10 villages, readers: more than 100 students,425 Book in library approx. price of Rs.85,000/-)
Donation to Hetampur K.C.College: Rs.1,00,000/-to motivate the Chemistry (Hons,) students (as a Scholarship)
Donation to Kukhutia High School: Rs.1,15,000/-(for Scholarship, Library and TLM)
Donation to Dubrajpur R.B.S.D High School: Rs.85,000/-(for construction of a cycle stand with shed)
Support to the need villagers by supplying foods at the time of COVID-19(2 times – in 1 st and 2 nd week of April 2020)


Dr. Biswajit Ruj
Chief Secretary
CSIR- Central Mechanical Engineering Research
Institute (CMERI)
[Under Ministry of Science & Technology,Govt.of India]
Durgapur, West Bengal, Phone: 8250035468/
9474372196( WhatsApp)

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top